Thailand

ভ্রমণপিপাসুদের স্বর্গরাজ্য থাইল্যান্ডে ভ্রমণ (পর্ব: ১)

২০১৯ সালের ২৫শে অক্টোবর থেকে ৩১শে অক্টোবর মোট সাত দিন একাকী ঘুরে আসলাম বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় টুরিস্ট দেশ থাইল্যান্ড থেকে, ইচ্ছা আছে সাত দিনের সাতটি পর্ব করে আপনাদের সাথে শেয়ার করার। তাই আজ ব্যাংককের প্রথম দিন দিয়েই শুরু করলাম:
অফিস থেকে ছুটি পাওয়ার আগেই হুট করে Thai Lion এর রিটার্ন টিকেট কেটে ফেলি ১২,৭২৯ টাকায়, সেইসাথে ডোমেস্টিক এয়ারের (Bangkok to Krabi & Phuket to Bangkok) টিকেট ও কেটে ফেলি ৩,৮০০ টাকায়। বাংলাদেশ থেকেই Agoda এর মাধ্যমে আমি ব্যাংকক, ক্রাবি এবং ফুকেটের হোস্টেল বুকিং করেছিলাম। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিজেই ভিসার জন্য এপ্লাই করেছিলাম, আল্লাহর রহমতে তিন দিনেই ভিসা পেয়েছিলাম।

২৫ শে অক্টোবর রাত ১.১৫ তে আমার ফ্লাইট ছিল, থাইল্যান্ডের স্থানীয় সময় ভোর ৪ টা ৪৫ এ বিমান ডন মুয়েং এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করে। ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট দিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলাম সাথে সাথে ইমিগ্রেশন পুলিশ পাসপোর্টে সিল দিয়ে পাসপোর্ট ফেরত দেয়। বাংলাদেশ থেকেই $৪.৩৫ এ KLOOK এর সাইট থেকে DTAC এর ৮ দিনের আনলিমিটেড ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়েছিলাম, ইমিগ্রেশন শেষে DTAC এর শোরুম থেকে KLOOK এর ভাউচার দেখিয়ে শুরুতেই সিম জোগাড় করি কারণ ইন্টারনেট ছাড়া থাইল্যান্ডে আমি একদম অচল। এখন আমি আমার গন্তব্যে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, আমার প্রথম গন্তব্য ছিল #WAT_ARUN টেম্পল। তাই ভোর ৬টায় A3 বাসে করে DMK এয়ারপোর্ট থেকে SILOM road যাই, সেখানে কলা, পাউরুটি এবং ফ্রেশ পেঁপে খেয়ে Subway metro খুঁজি, গুগল ম্যাপে খুঁজতে কিছুটা সময় লেগেছিল পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ১০ মিনিট হেঁটে SILOM subway metro station খুঁজে পাই। SILOM subway metro station থেকে আমার যাত্রা ছিল ITSAPHARA নামক স্টেশন এর, ১০ মিনিটেই ITSAPHARA station এ পৌঁছে যাই। সেখান থেকে এক কিলোমিটার হাঁটা পথে পৌঁছে যাই আমার প্রথম গন্তব্য WAT ARUN টেম্পলে। ৫০ বাথে টিকিট কেটে টেম্পলের ভিতরে ঢুকি। আহ কি দারুন শিল্পকর্ম!!! যতই দেখছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি।

Wat Arun, Thailand
Wat Arun Temple
Thailand
Wat Arun Temple

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যাংককের গরম বারছিল, ১ ঘন্টা ঘুরাঘুরি করে এবার আমার দ্বিতীয় গন্তব্য #WAT_PHO টেম্পল। Chao Praya নদীর একপাশে Wat Arun আর অন্যপাশে Wat pho, নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল, Chao Praya নদী যেমন ব্যাংককের প্রান, তেমনি আমাদের বুড়িগঙ্গা নদী ও ঢাকার প্রাণ। কালের বিবর্তনে সেই বুড়িগঙ্গা আজ অস্তিত্বহীনতায় ভুগছে, আফসোস। ৪(চার) বাথ খরচ করে নদীর ওপারে আসলাম। নদীর ওপারে এসে ফ্রেশ তরমুজ খেয়ে Wat pho টেম্পল ঘুরলাম। প্রচণ্ড গরমে আমার পুরোপুরি নাজেহাল অবস্থা। পরের গন্তব্য ছিল Grand Palace কিন্তু সারারাত জার্নি এবং অসহ্য গরমে আমি ক্লান্ত, তাই Wat pho টেম্পল থেকে লোকাল বাসে করে চলে গেলাম Khaosan Road, সেখান থেকে ৫-৭ মিনিট হাঁটা দূরত্বে ছিল আমার হোস্টেল Sabye Club Hostel। হোস্টেলে যেয়েই গোসল করে সোজা বিছানায়, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ঘুমালাম।

Thailand
Chao Praya River
Victoria Monument
Victoria Monument

আমার প্রথম হোস্টেলে থাকার অভিজ্ঞতা দারুন ছিল, কারণ হোস্টেলের প্রতিটা স্টাফ এবং গেস্ট সবাই ছিল খুব ফ্রেন্ডলি। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিলাম। এরপর হেঁটে হেঁটে নতুন এলাকা ঘুরে দেখলাম। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটি শহর। হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম আবারো Chao Praya নদীর তীরে। রাতের Chao Praya নদী আরো সুন্দর, আলোকিত ও ঝলমলে। রাতের খাবার পর্ব শেষ করে হোস্টেলে ফেরার পথে দেখা হলো হোস্টেলেরই একজন থাই মহিলা গেস্টের সাথে। উনি আমাকে পুরো Khaosan Road এলাকাটা ঘুরে দেখালেন, Victoria Monument, মুসলিম এলাকা, Khaosan Road পার্টি জোন। লোকাল বাস কোথা থেকে ছাড়ে, কত নম্বর বাস কোন এলাকায় যায় এরকম আরো অনেক সাজেশন তার কাছ থেকে নিয়ে দুজনে রাত একটায় হোস্টেলে ফিরে আসলাম এবং সেই সাথে ব্যাঙ্ককের প্রথম দিন শেষ করলাম

2 thoughts on “ভ্রমণপিপাসুদের স্বর্গরাজ্য থাইল্যান্ডে ভ্রমণ (পর্ব: ১)”

  1. onek onel bar Bangkok & Phuket gechi kintu evabe bindas hoye ghora hoyni. abar jete isscha korche apnar travel details pore. thanks for sharing.

    1. আমারও ইচ্ছা আছে আবারো থাইল্যান্ড যাবার, এবার আর একা যাব না, ইনশাআল্লাহ পরিবার নিয়ে যাবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *